প্রিন্ট এর তারিখঃ Nov 23, 2024 ইং || প্রকাশের তারিখঃ ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ইং
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসীরা যুক্তরাজ্যে থেকে বাংলাদেশকে সাপোর্ট করেছিল এবং প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিল। এবারও দ্বিতীয় যুদ্ধে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা কাজ করেছি। আমরা জালিমের পতনের আন্দোলনের মাধ্যমে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা। প্রবাসীরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য স্বাধীনতা আন্দোলন করেছে। বাংলাদেশের বাইরে বৃহত্তর সমাবেশে করেছি আমরা। দেশী-বিদেশী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সফল হয়েছি। এক যুগ আগে যুক্তরাজ্যে গিয়েও আমি দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমি দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম, আছি ও জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকবো। বাংলাদেশে আজ জালিমের পতন হয়েছে। আমার মা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হয়েছে। আজ আমরা একটি যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য সংবর্ধনা নিয়েছি।
মঙ্গলবার বিকালে শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির টানা তিন বারের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কয়ছর এম আহমেদ।
নুরুল ইসলাম নুরুলের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।
দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় আমরা দেশে আসতে পারি নি উল্লেখ করে কয়ছর বলেন, আপনারা দেশে থেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, আর আমরা প্রবাসে থেকেও নির্যাতিত হয়েছিলাম। দেশনায়ক তারেক রহমান একদিন বলেছিলেন, ‘দেশ দেশ বাংলাদেশ, বিএনপির বাংলাদেশ’। বলেছিলেন, ‘ফায়সালা হবে রাজপথে’। সেদিন দূরদর্শী বক্তব্য রেখেছিলেন তারেক রহমান। সত্যি সত্যি দীর্ঘ আন্দোলনের পর ফায়সালা হয়েছে রাজপথে। তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ, রুখে দাঁড়াও’। আবু সাঈদ সেদিন রুখে দাঁড়িয়েছিল, বাংলাদেশ রুখে দাঁড়িয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়াও অনেক আগে বলেছিলেন, ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’। আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে আমরা বুঝতাম না, কেন দেশ বাঁচাও- মানুষ বাঁচাও। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছিলেন ওই জালিম-খুনি-মাফিয়া সরকার দেশ বিক্রি করে দেবে, দেশের মানুষকে গুম-খুন করবে, পাখির মতো গুলি করে হত্যা করবে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে আমি প্রথম যুক্তরাজ্যে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হই, এর আগে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম। সেই সময় বিএনপির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কমিটি হওয়ার পর পরই তিনি যুক্তরাজ্যে সফরে যান। আমরা জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জের মানুষ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কে প্রধান অতিথি করে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করি। ওইদিন আমি বলেছিলাম, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে গণতন্ত্র মুক্ত না হবে, যতদিন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের উপর করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হবে ততদিন পর্যন্ত আমি কোন সংবর্ধনা নেব না। আমি এরপর বারবার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হয়েছি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছি, কিন্তু আমি কোন জায়গায় সংবর্ধনা নেইনি, আমি আমার কথা রেখেছি।
খুনি-মাফিয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা পাওয়া উচিত, প্রবাসী বাংলাদেশীরাও আমাদের সাপোর্ট করেছেন। দেশনায়ক তাকের রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করেছেন। শেষ দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের বিজয় হয়েছে।
এসময় তিনি যত দ্রæত সম্ভব অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহবান জানান। বলেন, আমরা বিশ^াস করি- নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দলের, বেগম খালেদা জিয়ার ও দেশনায়ক তারেক রহমানের সরকার হবে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের সাথে রাজনীতি করেছি, প্রবাসে গিয়েও রাজনীতি করেছি, এখন আবার আপনাদের কাছে আমি ফিরে এসেছি। অতীতের মতো আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই, আপনাদের ভালোবাসা চাই। আশা করি, আমি আপনাদের পাশে পাবো, আমিও আপনাদের পাশে আছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল মোতালেব খাঁন, অ্যাড. মল্লিক মইন উদ্দিন সুহেল, অ্যাড. শেরেনুর আলী, আকবর আলী, নাদির আহমদ, আশিকুর রহমান আশিক, আবুল কালাম আজাদ, নুরুল ইসলাম সাজু, সেলিম উদ্দিন, আ. ত. ম. মিছবাহ, রেজাউল হক, অ্যাড. আব্দুল হক, আসিনুল হক, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, সৈয়দ তিতুমীর, আব্দুর রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর শওকত, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ কয়েছ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মনাজ্জির হোসেন, জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য সচিব মো. তারেক মিয়া, জেলা মহিলা দলের সভাপতি লুৎফা আনোয়ারসহ যুক্তরাজ্যে থেকে আগত বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।